বাই রোডে ভুটান


ভূটানকে বলা হয় সৌন্দর্যের নগরী। ভূটানে যেতে যেহেতু বাংলাদেশীদের ভিসা লাগে না তাই অসংখ্য পর্যটক প্রতিবছরই ভূটান পাড়ি জমায়।
কিভাবে যাবেন:
ভুটান বাই রোডে যেতে চাইলে আপনাকে ভারতীয় ট্রানজিট ভিসা নিতে হবে। ঢাকার শুধুমাত্র গুলশান শাখা থেকে ভারতের ট্রানজিট ভিসা দিয়ে থাকে। টুরিস্ট ভিসায় হবে না। তবে টুরিস্ট ভিসায় শুধুমাত্র ফ্যুন্টশোলিং ঢুকতে পারবেন। ট্রানজিট ভিসার মেয়াদ থাকে ১৫ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ দিন। এই ভিসায় শুধুমাত্র ভুটান আর যাওয়ার মাঝে ৭২ ঘন্টা এবং আসার সময় ৭২ ঘন্টা ভারতে অবস্থান করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে দার্জেলিং ঘুরে আসতে পারেন। তবে কোন ভাবেই নেপালে যাওয়া সম্ভব না।
ভিসা হাতে পেলে শ্যামলী বাসে উঠে পরুন। আরামবাগ থেকে রাত ৮টায় এবং কল্যাণপুর থেকে ৯টায় ছাড়ে। ঢাকা থেকে বুড়িমারি সীমান্তে পৌছাতে সময় লাগে ১০ থেকে ১১ ঘণ্টার মত। রাস্তায় যানজট না থাকলে সকাল ৮টার মধ্যে আপনি বুড়িমারি সীমান্তে পৌছে যাবেন। ৯টায় ইমিগ্রেশন অফিস খুললে প্রয়োজনীয় কাজ শেষে চ্যাংড়াবান্ধা পোর্ট পার হয়ে সরাসরি ট্যাক্সি নিয়ে জয়গাওতে চলে যান। রিজার্ভ গাড়িতে ভাড়া নেবে ১২০০-১৬০০ রুপি। একা হলে বাসে ভেঙ্গে ভেঙ্গে যেতে পারেন সেক্ষেত্রে ময়নাগুড়ি গিয়ে সেখান থেকে বাসে জয়গাও যেতে হবে। চ্যাংড়াবান্ধাতেই ডলারকে রুপিতে ভাঙ্গিয়ে নিন। ভুটানেও এই রুপিই চলবে। রুপি আর গুল্ট্রামের মান সমান।
জয়গাওতে পৌঁছে প্রথমে ভারতীয় ইমিগ্রেশনে এক্সিট সিল নিয়ে ভুটানে ঢুকে পড়ুন। আশ্চর্য হবেন তখনই যখন দেখবেন ভারতের জয়গাও আর ভুটানের ফ্যুন্টশোলিং এর মাঝে মাত্র একটি মাঝারি দেয়াল অথচ কত বেশি পরিবেশগত পার্থক্য। গোছানো একটা দেশ ভুটান। আরো অবাক হবেন যখন দেখবেন ভারত থেকে ভুটানে ঢোকার সময় কেউ আপনাকে কিছু জিজ্ঞেসও করবে না বা পাসপোর্টও দেখতে চাইবে না। তারপর ভুটান ইমিগ্রেশনে সিল নিয়ে যান বাসস্টান্ডে। সেখান থেকে ট্যাক্সি নিয়ে শুরু করুন থিম্পুর উদ্দ্যেশ্যে যাত্রা। পুরো ট্যাক্সি ভাড়া নেবে ২২০০-২৬০০ রুপি। সময় লাগবে ৫/৬ ঘন্টা।
কি দেখবেন:
পুরো ১মাস থাকলেও ভুটান দেখে শেষ করতে পারবেন না। তাই সাধারণত যে কয়েকটা জায়গা দেখলে ভুটান দেখা হয় বলে ধরে নেয়া হয় সে কটা জায়গা আর সেখানে দেখার স্পট গুলো অতি সংক্ষেপে বলছি।
থিম্পু:
সবচাইতে ভালো হয় ৩/৪ দিনের জন্য একটা ট্যাক্সি ভাড়া করে নিন। প্রতিদিন সময় ভেদে ২২০০-৩০০০ রুপি নিবে। ট্যাক্সি ড্রাইভারই আপনার গাইড হয়ে যাবে। ওখানকার ৯৫% টাক্সি ড্রাইভারই ট্যাক্সির মালিক এবং যেকোন জায়গায় যেকোন হোটেলে তারা ফ্রী থাকতে পারে। তাই কোন সমস্যা নাই। আর একা হলে থিম্পুতে ৮০০-১২০০ রুপিতে ট্যাক্সিতে সব সাইট সিয়িং করিয়ে থাকে।
পুনাখা:
পুনাখা যেতে হলে থিম্পু থেকে আলাদা পারমিশন নিতে হয়। কোন ঝামেলা নাই। গেলেই দিয়ে দিবে। পুনাখায় থাকার তেমন ভালো হোটেল নাই। তাই সবাই সকালে রওনা দিয়ে সন্ধ্যার মধ্যেই থিম্পু ফিরে আসে।
পারো:
ছোট্ট আর গোছানো শহরের একমাথা থেকে অন্যমাথা হেটে গেলেও ১০-১৫ মিনিট সময় লাগে। কিন্তু ফিরে আসার পর এই ছোট্ট শহরটাকেই আপনার বেশি মনে পড়বে। কেমন যেন মায়া লাগা একটা জায়গা। মানুষজনও অন্যান্য শহরের চাইতে বেশি হাসিখুশি এবং মিশুক। এ শহরের কাছেই আছে আমার ভুটান যাবার প্রধান আকর্ষন টাইগার নেস্ট। সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে ১০০০০ ফিট উপরে পাহাড়ের গায়ে চুম্বকের মত আটকে থাকা প্রায় ৪০০ বছর পুরানো একটি বোদ্ধ মন্দির।
চেলেলা পাস:
পারো থেকে আধাবেলায় ঘুরে আসা হায় চালেলা পাস। সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে ১২২০০ ফিট উপরে ভুটানের সর্বোচ্চ রাস্তা হচ্ছে এটা। ভুটানে এ কয়দিনে বরফ না পেলে এখানে পাবেন আশাকরি।
ফ্যুয়েতশোলিং থেকে থিম্পু হয়ে পুনাখা ঘুরে আবার থিম্পু ফিরে পারো ও চেলেলা পাস ঘুরে পারো থেকে আবার ফ্যুন্টশোলিং ফিরে আসবেন। এবং সেখান থেকে চ্যাংড়াবান্ধা হয়ে বাংলাদেশ।






Popular posts from this blog

বরিশাল

সেন্টমার্টিন দ্বীপের জনপ্রিয় দশটি রিসোর্ট/হোটেল

বগালেক